বিশেষ সংবাদদাতা:
চলে গেলেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ হরিশঙ্কর বাসুদেবন। শনিবার রাত পৌনে একটা নাগাদ সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
মে মাসের শুরু থেকেই জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। শুক্রবার শ্বাসকষ্ট হওয়ায় তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর লালারসের পরীক্ষা হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বিধাননগর থানার পুলিশ তাঁর পরিবারের ৫ সদস্যকে হোম আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। তাঁর মৃত্যুর কারণ করোনা, নাকি অন্য কোনও কারণে, তা খতিয়ে দেখছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
তাঁর মৃত্যুতে হতবাক বাংলার শিক্ষা মহল। শোকস্তব্ধও। তিনি কী করে করোনায় আক্রান্ত হলেন, সেই বিষয়টিই বুঝে উঠতে পারছে না তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল। বাংলায় তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর স্ত্রী তপতী গুহঠাকুরতাও একজন ইতিহাসবিদ। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ক্রাইস্ট চার্চ কলেজ থেকে তিনি স্নাতক হন। তার পর কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর হন। পিএইচডি–ও করেন সেখান থেকে। ভারত ও ইউরোপের গণতন্ত্র ও উন্নয়ন নিয়ে তাঁর গবেষণা শিক্ষা মহলে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। রাশিয়া ও ভারতের সম্পর্ক এবং সমসাময়িক বিশ্বরাজনীতি নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পড়িয়েছেন তিনি। কলকাতার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজের অধিকর্তা ছিলেন। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া–সহ বহু নামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের প্রাক্তন সদস্য তিনি। বেশ কিছু বই লিখেছেন, যা মননশীল পাঠককে ভাবিয়েছে। তাঁর লেখা ‘ইন দ্য ফুটস্টেপস অফ আফানসি নিকিটিন’ এবং ‘শ্যাডোস অফ সাবস্ট্যান্স, ইন্দো রাশিয়ান ট্রেড অ্যান্ড মিলিটারি টেকনিক্যাল করপোরেশন’ উচ্চশিক্ষিত মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।